যারা এই প্রথম আমার গল্পঃ পড়ছেন তাদের উদ্দেশে বলি এটা সিজন ২ । সো আপনারা অবশ্যই অবৈধ এর সিজন ১ এর পর্ব গুলি পড়ে তারপর এই সিজন শুরু করবেন।
MysteriousGuy 💞
আজ প্রায় দু মাস হয়ে গেলো বস এর জন্মদিনের দিন থেকে । রেহান গ্রামে তার বাড়িতে । প্রায় সাড়ে 8টায় রেহান এর চোখ খুলল তার মায়ের ডাকে । রেহান আধ বোজা চোখে ঘুম থেকে উঠে বসল ।
মা – অনেক বেলা হয়েছে ওঠ বাবা ।
রেহান – বাবা কোথায় ?
মা – মাঠে গিয়েছে ।
রেহান উঠে ফ্রেস হতে গেলো । আজ নিয়ে 12 দিন সে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফিরেছে । রেহান এর কর্ম জীবন ভালই যাচ্ছে । ভালো স্যালারি, ভালো জীবনযাপন এসব নিয়ে সে খুব স্বচ্ছল । রেহান বাথরুমে স্নান করছে । শাওয়ার এর জল রেহান এর মাথার চুল বেয়ে পড়ছে । রেহান ডুব দিল অতীতে। রেহান এর এই দু মাস খুব ভালো যায়নি । অফিসের কলিগ নীলার সাথে একবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিল । তারপর নীলা তার স্বামী অর্থাৎ সোহম দুজন দিল্লী তে শিফট হয়ে যায় । যার ফলে রেহান এর শারীরিক চাহিদা মেটানোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় । নীলা নিজে থেকে রেহান কে সব সোশ্যাল সাইট থেকে ব্লক করে দেয়। মনেহয় নীলার গিলটি ফীল হয়েছে । বসের জন্মদিন এর রাতের ঘটনার পর । রেহান বস এর থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসে । এখানে রেহান এর জন্ম, এখানে কিছুদিন থাকার পর রেহান এর মস্তিষ্ক চাঙ্গা হয়ে গেলো। রেহান আর কদিন থাকবে বাবা মায়ের কাছে । বস কিছু বলবে না রেহান সেটা জানে ।
রেহান চায় সে তার মা বাবা কে নিয়ে একেবারে কলকাতা শিফট হতে কিন্তু জমিজমা এসব ছেড়ে তারা যেতে চায় না। বলে নাকি কলকাতায় তাদের দম বন্ধ হয়ে আসবে । দেখতে দেখতে আরো চার পাঁচদিন কাটলো। রেহান এর মন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে । রেহান তার মাকে বলল –
রেহান – মা আমি সামনের শুক্রবার কলকাতা যাচ্ছি ।
মা – আর কটা দিন থেকে যেতি বাবা ।
রেহান – অনেকদিন তো থাকলাম মা । আরো যদি থাকি তাহলে চাকরি ছাড়তে হবে । তোমাদের তো বলছি চলো এসব ছেড়ে একেবারে ।
মা – এখন না রে । তোকে বিয়ে দিয়ে একেবারে সবাই চলে যাবো ।
রেহান আর কিছু বলল না । এর মধ্যেই এল রেহান এর বাবা –
বাবা – একটু সময় না গেলেই কামলা গুলো ফাঁকি দেয় ।
আমি – বাবা আমি শুক্রবার যাচ্ছি কলকাতা ।
বাবা – আর কদিন থেকে যেতি। আবার যে কবে আসবি কে জানে । পুজোতে আসবি না ?
আমি – মনে হয়না ছুটি পাবো । এবার পুজোতে তুমি আর মা কলকাতা এসে পরো।
বাবা – বেশ।
আজ মঙ্গলবার । হাতে গুনে আর 2দিন আছি গ্রামে ।
খেয়ে দেয়ে বিছনায় সুলাম । ফোন খুলে ইনস্টাগ্রাম খুলতেই
রেহান এর বুকে একটা চিলিক মেরে উঠল । প্রথমেই স্নেহা ,
ইনস্টা তে তার ছবি দেখে রেহান এর আঙুল অবশ হয়ে গেলো সে স্ক্রোল করতে পারছে না । স্নেহার সৌন্দর্যে দেখে সে মোহিত হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু তখনই তার সামনে জাকির বাবুর জন্মদিনের রাতের কথা চোখের সামনে ভেসে আসে । রেহান রাগে ফোনটা আছাড় মারে বিছানায়। ফোনটা আছাড় খাওয়ায় অটোমেটিক স্নেহার ছবিতে লাইক পড়ে যায় ।
রেহান রুম থেকে বেরিয়ে মাঠের দিকে চলতে লাগল । পেছন থেকে রেহান এর বাবা বলে উঠল – দেখিস তো কামলা গুলো কাজ ঠিকঠাক করছে নাকি।
জাকিরবাবু অফিসের জন্য রেডি হয়ে পড়লেন ।
জাকির – হয়েছে ?
স্নেহা – হ্যা এসে পরো ।
জাকির বাবু খাবার টেবিলে বসে খেতে আরম্ভ করল ।
জাকির – তাড়াতাড়ি খাও শোনা স্কুলে যেতে হবে তো ।
স্নেহা – আজকে গাড়ি আসবে না তুমি ওকে স্কুলে দিয়ে পরে অফিসে যাবে ।
জাকির – ঠিক আছে ।
স্নেহা – খাও কিছু লাগলে বলো ।
স্নেহা কিচেনে গেলো সেখান থেকে হাত ধুয়ে বেডরুমে গেল । বেডরুমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে চুল আঁচড়াতে লাগল । তখন স্নেহার ফোন বেজে উঠল ।
স্নেহার মায়ের ফোন –
স্নেহার মা – কি করছিস মা ?
স্নেহা – এইতো তোমার জামাই আর নাতি কে খাবার দিলাম, খাচ্ছে ওরা ।
স্নেহার মা – তুই খাবি না ?
স্নেহা – খাবো ওদের খাওয়া হলে ।
স্নেহার মা – আচ্ছা বেশ ।
স্নেহা – বাবা আর মৌ ওরা কি করছে ?
স্নেহার মা – তোর বাবা টিভি দেখছে । আর মৌ ওই যে মোবাইল নিয়ে ।
স্নেহা – আচ্ছা ।
কিছুক্ষণ কথা হলো মা আর মেয়ের । কথা শেষ করে কল কাট করে স্নেহা ফোন বন্ধ করবে তখনই তার সামনে ইনস্টার নোটিফিকেশন গুলো সামনে এলো। খুলতেই তার সামনে দেখতে পেল রেহান তার রিসেন্ট ফটোটা লাইক করেছে । স্নেহার মনটা একটু ছেত করে উঠল । রেহান এর প্রফাইল ছবি টা দেখে সে একটু কেমন জানি হয়ে যায় । সে তাড়াতাড়ি মোবাইল বন্ধ করে বেরিয়ে এলো ।
স্নেহা – আর কিছু লাগবে তোমাদের ?
জাকির – না ।
জাকির আর সবুজ বেরিয়ে পড়ল এপার্টমেন্ট থেকে । স্নেহা এগিয়ে দিয়ে এলো । জাকির আর সবুজ সোসাইটি থেকে বেরিয়ে পড়ল । স্নেহার এপার্টমেন্ট এ ঢুকতে যাবে তখনই সিকুরিটি বলল –
সিকুরিটি – গুড মর্নিং মেম ।
স্নেহা – গুড মর্নিং ।
সিকুরিটি – ভালো আছেন ।
স্নেহা – হ্যা, আপনি ?
সিকুরিটি – ভালো মেম , একটা কথা জিজ্ঞাসা করার ছিল ?
স্নেহা – কি ?
সিকুরিটি – স্যার এর অফিসে যে কাজ করে রেহান , ওকে তো অনেকদিন থেকে দেখতে পারছি না । ওর কি হয়েছে ?
স্নেহার একটু অপ্রস্তুত হয়ে বলল – ও ওর গ্রামে গেছে ।
সিকুরিটি – ও ।
স্নেহা – কেনো ?
সিকুরিটি – না অনেকদিন থেকে দেখি তাই আপনাকে জিজ্ঞাসা করলাম । কিছু মনে করবেন না ।
স্নেহা – ঠিক আছে ।
বলে সে এপার্টমেন্ট এর ভেতরে চলে গেল । তারপর বউ আর শাশুড়ি মিলে খেতে বসল। খেয়ে দেয়ে উঠে সব গোছগাছ করে স্নেহা গেলো বেডরুমে ।
স্নেহা – মা আমি রুমে গেলাম । কিছু লাগেল ডাক দিও ।
শায়লা দেবী – আমার কিছু লাগবে না মা । তুমি বিশ্রাম করো।
বলে শায়লা দেবী টিভি চালিয়ে বসল ।
স্নেহা খাটে সুয়ে পড়ল । সুয়ে শুয়ে ফোন ঘাঁটছে স্নেহা । ইন্সটাগ্রামে সে তার প্রোফাইল টা চেক করছিল । স্নেহার কি যে হলো সে আবার নোটিফিকেশন খুলে রেহান এর আইডি তে গেলো । রেহান এর প্রফাইল এ রেহান এর ছবি গুলি দেখে তার শরীর যেন কেমন লাগছে । হঠাৎ তার সেদিনের রেহান এর ব্যবহার এর স্মৃতি চারণ হলো । স্নেহা ফোন বন্ধ করে চোখ বুঝল।
আজ শুক্রবার , রেহান এর ব্যাগ গোছগাছ করা শেষ । রেহান এর মা বলল –
মা – আজকে দিনের অবস্থা খুব খারাপ ।
রেহান – কিছু করার নেই মা আজকে যেতেই হবে ।
বলে রেহান মা বাবা কে প্রণাম করে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিলো। রেহান এর মা বাবা কে ছেড়ে যেতে কষ্ট হচ্ছিল। তবুও সে নিজেকে সামলে নিল । রেহান সকাল 7টায় ট্রেন এ উঠল ।
এখন বিকেল সারে 4টা বাজে। আকাশ ভেঙে বৃষ্টি হচ্ছে । কোনো মতোন রেহান ট্রেন থেকে নেমে প্লাটফর্ম এর একটা চেয়ার এ আধ ভেজা হয়ে বসল । রুমাল চিপে চিপে মাথা মুছল রেহান । আধ ঘন্টা যাবত প্রচণ্ড বৃষ্টি পড়তে লাগল। কলকাতার গরম যদি এখন গিয়ে কমে কিছু । একটু বৃষ্টি কমতেই মায়ের দেওয়া ছাতা টা টাঙিয়ে স্টেশন এর থেকে রেহান বেরোলো । বেরিয়ে হলুদ এম্বাসেডর এ চড়ে যেতে লাগল সোসাইটির উদ্দেশে । রেহান তার মাকে ফোন করল ।
রেহান – হেলো মা , আমি পৌছালাম ।
মা – আচ্ছা , রুম এ গিয়েছিস ?
রেহান – না না সোসাইটিতে যাচ্ছি টেক্সি করে।
মা – বৃষ্টি নেই ? এদিকে তো সকাল থেকে বৃষ্টি পড়ছে ।
রেহান – একটু আগে হয়েছিল এখন নেই কিন্তু মেঘ ডাকছে । ফ্ল্যাট এ গিয়ে ফোন করছি ।
মা – আচ্ছা ।
মেঘ ডাকছে তবুও সবুজ কিছুতেই মানছে না ।
স্নেহা – বাবু তোকে না করলাম না এখনি বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে আবার ।
সবুজ – না চলো । চলো না ।
জাকির – কি চাইছে ও ?
স্নেহা – পার্কে যাবে । এমনিতেই দিন খারাপ ।
জাকির – এত বায়না করছে তো যাও ।
স্নেহা – এখনি বৃষ্টি শুরু হবে ।
সবুজ – পড়বে না বৃষ্টি ।
সবুজের জেদের সামনে হার মেনে স্নেহা একটা ছাতা হাতে নিয়ে ও সবুজ কে নিয়ে চলল ।
((অবৈধ সিজন ২ এর পরের যত পর্ব আসবে সব আমার ইনস্টাগ্রাম এ আসবে আর রঙ নাম্বার সিজন ২ এর সব পর্ব আমার ইন্সটাগ্রামে এ রয়েছে ।
👉🏽 instagram- @mysteriiousguy))
হালকা বাতাস বইছে । পার্কে সবুজ কয়েকজন বাচ্চার সাথে ভেজা রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছে ।
স্নেহা – দৌড়াবি না । পরে যাবি ।
কে কার কথা শোনে । সোসাইটির সামনে এসে ট্যাক্সি টা থামল । ভেতর থেকে রেহান বেরোলো । ড্রাইভার কে টাকা দিয়ে ব্যাগটা ওঠাবে তখনি শুরু হলো মুসূলধরা বৃষ্টি। মেঘ গর্জন করে বিদ্যুৎ চমকাতে লাগল । আর বাতাসে গাছের ডাল উল্টাতে লাগল।
রেহান প্রায় ভিজেই গেল । কোনরকমে ছাতা টা খুলল । তারপর গেট দিয়ে ভেতরে যেতে লাগল । তখনই এক পাক হাওয়া জোরে এসে লাগল রেহান এর উপর হাত থেকে ছাতা টা ছিনিয়ে নিয়ে গেল। রেহান একটা দৌড় দিল কিন্তু হঠাৎ থেমে গেল । রেহান এর চুল হওয়ায় উড়ছে তার চোখের সামনে স্নেহা । স্নেহা সবুজকে নিয়ে পার্কের রাস্তা দিয়ে দৌড়ে আসছে । স্নেহার চোখ রেহান এর উপর পড়তেই স্নেহা থমকে গেল । চারপাশে লোক শূন্য পরিবেশ বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আর জোরে বৃষ্টি আর হাওয়া বইছে । দুজনের চোখ দুজনের উপর আটকে রইলো । রেহান এর হাতের ব্যাগ টা বৃষ্টির জলে ভিজে একাকার । ভেতরের পড়ার জামাকাপড় সব ভিজে যাচ্ছে। দুজনের চোখ দুজনের উপর । স্নেহার শরীর খারাপ লাগছে ।
স্নেহা আর সময় নষ্ট করল না । সবুজ কে নিয়ে দৌড়ে সোসাইটির ভেতরে গেল । লিফট এ গিয়ে ঢুকল স্নেহা আর সবুজ ।
ভেতর থেকে –
সবুজ – রেহান কাকু এসো ।
হাত বাড়িয়ে সবুজ ডাকতে লাগল । রেহান এর চোখের সামনে লিফট এর দরজা বন্ধ হয়ে পড়ল ।
রেহান আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে রইল। বৃষ্টির ঝাপটা মুখে বাড়ি খেতে লাগল রেহানের।
: – এর পরের সব পর্ব আমি ইনস্টাগ্রাম এ আপলোড করবো। আমার গল্পঃ যারা ভালোবাসেন তারা আমাকে ইন্সটাগ্রামে ফলো করে পড়তে পারেন 💞। আর হ্যা ” রঙ নাম্বার এর সিজন 2″ এর সমস্ত পর্ব আমার ইন্সটাগ্রামে আপনারা পেয়ে যাবেন -:
আমার সাথে যোগাযোগ করার জন্য –
0 Comments